আবার কোভিড-১৯ (Covid-19 Coronavirus Pandemic) এর বিস্তার লাভ করেছে। প্রতিদিন নিউজ পেপার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে যে মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তা আসলেই হতাশাজনক। তাই আসুন আমরা হতাশ না হয়ে নিজেদের লাইফস্টাইল পরিবর্তন করি। আজকের আলোচনায় সেটা তুলে ধরা হয়েছে।
বর্তমান সময়ে বিশ্বব্যাপি বহুল আলোচিত একটি রোগ করোনা ভাইরাস বা (Covid-19 Coronavirus Pandemic)। সারা পৃথিবীতে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে । আজ আমি এই করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকারী এবং বহুল ব্যবহৃত হোমিওপ্যাথিক ও ভেষজ চিকিৎসা পদ্ধতির কিছু পরামর্শ আপনাদের উদ্দ্যেশ্যে শেয়ার করবো। গত বছর যে পদ্ধতি অনুসরণ করে বেশ ভালো ফল পাওয়া গেছে সেটা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
প্রথমেই বলে বলে নেওয়া ভাল, করোনা মহামারীর ১০০%কার্য্যকর প্রমানিত চিকিৎসা পদ্ধতি বা প্রতিষেধক (এ্যালোপ্যাথিতে) এখনো পর্যন্ত পৃথিবীতে আবিস্কৃত হয়নি । ভ্যাকসিন আবিষ্কার এর পরও দেখা যাচ্ছে অনেকেই আক্রান্ত হতে।( সমস্ত চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর শ্রদ্ধা রেখে)
তবে লক্ষনানুসারে হোমিওপ্যাথিক কিছু মেডিসিন ও ন্যাচারাল উপাদান ব্যাবহার করে বেশ অাশানুরূপ ফল পাওয়া গেছে।
তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ভাইরাসের বিস্তার রুদ্ধ করা এবং ভাইরাসকে মেরে ফেলা আমাদের এক মাত্র উদ্দেশ্য ।
কিছু প্রাথমিক ব্যাবস্থা সাথে সাথে নিতে পারলে আমরা সহজেই এই ভাইরাসের হাত থেকে নিস্তার পেয়ে আরোগ্য লাভ করতে পারি । করোনা ভাইরাসের প্রাথমিক উপসর্গগুলি হলোঃ- শুষ্ক কাশি। ক্রমান্বয়ে জ্বর, সর্দি, গলাব্যাথা, ঠান্ডা লাগা, দূর্বল লাগা ,সমস্ত শরীরে ব্যাথা, পেটে ব্যাথা, পাতলা পায়খানা, শ্বাস কষ্ট ইত্যাদী ।( অনেক সময় এই লক্ষণ প্রকাশ নাও থাকতে পারে)
আমাদের শরীরে জীবাণূ প্রথমে নাক, মুখ ও চোখ দিয়ে প্রবেশ করে । শরীরে প্রবেশ করে প্রায় ৪ দিন গলায় অবস্থান করে ধীরে ধীরে সংক্রমন বাড়াতে থাকে । আমরা যদি প্রথমেই ভাইরাসের সংক্রমনকেকে বাঁধা দিতে পারি তাহলে খুব সহজেই এই মরণ ঘাতি ভাইরাস থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা সম্ভব ।
Covid-19 Coronavirus Pandemic চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা :
১। প্রথমে এক পাতিল ২/৩ লিটার পানি চুলায় বসিয়ে পানি ফুটাতে থাকবে। অতপরঃ ফুটন্ত পানি চুলা থেকে নামিয়ে মাথায় একটি তোয়ালে বেঁধে সেই পানির গরম ভাপ নিতে থাকবে । নাক দিয়ে টেনে মুখ দিয়ে ছাড়বে, মুখ দিয়ে টেনে নাক দিয়ে ছাড়বে, ১০ থেকে ১৫ মিনিট করে প্রতিদিন ৪ ঘন্টা পরপর ৫/৭দিন এইভাবে ভাপ নিতে থাকবে।
তবে পানিতে যদি প্রয়োজনে মেন্থল/অাদা+ লবঙ্গ মিশানো ভাপ নেয়া যায়, তাহলে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়।
২। Breathing/শাসকস্ট হলে প্রয়োজনে হোমিওপ্যাথিক ন্যাজাল ড্রপ বেশ ইফেক্টিভ। (পরিক্ষীত) অধিকাংশ ক্ষেত্রে-ই দেখা গেছে, এই পদ্ধতির চিকিৎসা ঠিকমত নিতে পারলে ২ দিনেই ভাইরাসটি মারা যায়।
৩। সামান্য লবন, মেন্থল, কয়েকটি রসুন কোয়া কে গরম পানিতে মিশিয় প্রতি ৪ ঘন্টা পরপর কুলকুচি করবে।
হালকা জ্বর ও খুসখুসে কাশি হলে যা করবেন:
প্রতি ২৫০ মিঃলিঃ চায়ের জন্য নিম্নের উপাদান ব্যাবহার করতে হবে।
- ক। আদা বাটা ৫ গ্রাম
- খ। লবঙ্গ চূর্ন ২ গ্রাম
- গ। কালোজিরা চূর্ন ২ গ্রাম
- ঘ। দারুচিনি চূর্ন ৩ গ্রাম
- ঙ। গোলমরিচ চূর্ন ২ গ্রাম
- চ। চা পাতা পরিমান মত
১০ থেকে ১৫ মিনিট ফুটানোর পর উল্লেখিত মিশ্রনটি কে ছেঁকে নিয়ে এতে ২চা চামুচ লেবুর রস, ২চামুচ মধু মিশিয়ে প্রতিদিন ৪ ঘন্টা পর পর ৫ থেকে ৭ দিন খাওয়া পর অনেকেই সুস্থ্য হয়ে যায়।( নরমালি প্রতিদিন ১ বার খেতে পারেন)
৪। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যা করতে পারেন।
- ক। তুলসি পাতা
- খ। যষ্টিমধু ১০গ্রাম
- গ। কালোমেঘ ১০গ্রাম
- ঘ। অশ্বগন্ধা ৫ গ্রাম
- ঙ। চিরতা ১০ গ্রাম
- চ। গুলঞ্চ লতা ১০গ্রাম
৫০০মিলি পানিতে ভিজিয়ে রাখবে ২ঘন্টা, অতপরঃ চুলায় ভালোমত জাল দিয়ে তিন ভাগের দুই ভাগ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিবে। অতপর তাতে ২০ মিলি মধু মিশিয়ে প্রতি ১ কাপ করে তিন বার খাবে ।
৫। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমুল যেমনঃ লেবুর শরবত, আমলকী, পেয়ারাসহ মৌসুমী ফল, প্রোটিন, আমিষ, ভিটামিন মিনারেল অথাৎ সুষম খাদ্য খাবে ।
৬। মৌসুমী সবজি বেশি করে খেতে হবে।কারন এতে যে খাদ্য উপাদান থাকে তা সেই সময়কার প্রতিষেধক গুণ সমৃদ্ধ।(অন্যতম পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সবজি হচ্ছে সজিনা এই কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের আমরা খাদ্য তালিকায় সজিনা অ্যাড করতে পারি)
৭। প্রতিদিন ৩০ মিনিট সকাল ১০.৩০ মিনিট থেকে ১২.৩০ এর মধ্যে সূর্য স্নান করা ভালো।
৮। প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করবে ।
৯। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাহিরে না যাওয়া টা ভালো এর পরিবর্তে ছাদ বা বারান্দা যেখানে রোদ, অালো- বাতাস চলাচল করে সেখানে দিনের কিছু সময় ব্যায় করুন।
১০। ভোরে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করুন। ভোরের নিরমল বাতাস সেবনের ফলে বিভিন্ন রোগ ভাল হয়।
১১। ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পূর্বে রোগী কোন ক্রোনিক রেগে ভুগে থাকে। তাহলে রোগীকে সেই রোগের ঔষধ, পথ্য ও সাবধানতা গুলি নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে ।
Covid-19 Coronavirus লক্ষণ অনুসারে কিছু হোমিওপ্যাথিক ঔষধ:
- আর্সেনিক অ্যালবা
- জাস্টিসিয়া
- একোনাইট ন্যাপ
- ব্রাওনিয়া এলবাম
- থুজা মাদার ও লক্ষন অনুযায়ী আরো ঔষধ হতে পারে। (***তবে চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী)
বিঃদ্রঃ রোগীর যদি শ্বাস কষ্ট দেখা দেয় তখন রোগীকে অবশ্যই হাসাপাতালে স্থানান্তর করতে হবে ।
উপরের নিয়ম গুলো সাধারণ মানুষের জন্য।
সতর্কতাঃ যারা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, হাই ব্লাডপ্রেশার ও কিডনির রোগ সহ এ জাতীয় জটিল রোগে ভুগছেন তারা অবশ্যই চিকিৎসক এর পরামর্শ নিবেন।
প্রয়োজনীয় লেখাসমূহঃ
- করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯/Covid-19 Coronavirus Pandemic) হোমিওপ্যাথিক ও ভেষজ চিকিৎসা
- ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানুন
- পিত্ত থলিতে পাথর এর হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা
- কোলেস্টেরল কি?
- মেস্তা বা মেলাসমা কি?

আসসালামু আলাইকুম, আমি ডাক্তার হাসিন-ই-মাহজাবিন জেবা। প্রতিষ্ঠাতা ওমেন্স হোমিও ক্লিনিক ও হিজামা সেন্টার। ডিএইচএমএস (DHMS) পাস করেছি বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ থেকে 2012 সালে। এরপর থেকে হোমিওপ্যাথ চিকিৎসা পেশায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। সুন্নাহ চিকিৎসা হিজামা (Cupping Therapy) থেরাপি/চিকিৎসাও দিয়ে থাকি। বর্তমানে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি পড়াশোনা করছি আয়ুর্বেদ (DAMS) চিকিৎসা শাস্ত্র নিয়ে।